বিদেশী ভাষা হিসাবে আরবি পরীক্ষা (TAAFL)
বিদেশি ভাষা হিসাবে আরবি ভাষার দক্ষতা যাচাই
আন-নুর ইনস্টিটিউট থেকে শিক্ষাসমাপনকারী প্রতিটি শিক্ষার্থী শুধু ভাষার দক্ষতা ও বাগ্মিতাই নয়; বরং নিজের মধ্যে এ ভাষার আধ্যাত্মিক তাৎপর্য এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তার প্রায়োগিক কার্যকারিতার গভীর উপলব্ধিও ধারণ করে। কেননা আরবি ভাষায় পারঙ্গমতা ভৌগলিক সীমানার গণ্ডি অতিক্রম করে বৈশ্বিক মঞ্চে সাংস্কৃতিক সংযোগ ও মতবিনিময় এবং ধর্মীয় ও আন্তঃধর্মীয় সংলাপের দ্বার উন্মোচন করে।
আমাদের শিক্ষার্থীরা অদূর ভবিষ্যতে দেশ-দেশান্তরে ছড়িয়ে পড়বেন, কেউ শিক্ষক হিসাবে ছড়াবেন জ্ঞানের আলো। কেউ হবেন কুরআন–সুন্নাহ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ পণ্ডিত ও গবেষক। কেউবা মসজিদে মুসুল্লিদের সালাতের ইমামতি করবেন এবং বহুদেশীয় ইসলামিক কমিউনিটি ও কালচারাল সেন্টারের দায়িত্বশীল হবেন। আরবি ভাষায় পারদর্শিতার গুণে তারা হয়ে উঠবে বৈচিত্রের মাঝে ঐক্যের সেতুবন্ধন। ইসলামের মধ্যপন্থী শিক্ষা ও ভাতৃপ্রতিম আদর্শের প্রচারের মাধ্যমে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের কাছাকাছি আসা এবং একে অপরকে জানাবোঝার পথ এ ভাষায় দক্ষতার মাধ্যমে সুগম হবে।
ইসলাম ও আরবি ভাষার সংরক্ষণ ও প্রসারে মিশরের আল-আযহারের সহস্র বছরের ঐতিহ্য ও অবদান সর্বজনবিদিত। আন-নুর ইনস্টিটিউট যেহেতু আল-আযহারের শিক্ষা কারিকুলাম অনুসরণ করে, তাই আরবি ভাষাই আমাদের পাঠদানের মূল মাধ্যম এবং এ ভাষা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা স্কলারদের সাথে জ্ঞানের সংযোগ স্থাপন ও আদান প্রদানেরও প্রধান মাধ্যম। তাই আরবি ভাষা ইনস্টিটিউট ভাষার দক্ষতা ও বিশুদ্ধতার মাধ্যমে বিশুদ্ধ জ্ঞান চর্চার সুযোগ সৃষ্ট করে।
আরবি ভাষা ইনস্টিটিউট দুই ধরণের ভাষা পরীক্ষা আয়োজন করে থাকেঃ
* যে কোনো পরীক্ষা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নির্ধারিত পরীক্ষায় ক্লিক করুন।
স্তর নির্ধারণী পরীক্ষা
উদ্দেশ্যঃ আন-নুর ইনস্টিটিউটে ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের আরবি ভাষার দক্ষতা যাচাই করা।
আরবি ভাষা পরীক্ষা আন-নুর ইনস্টিটিউটের শিক্ষা কারিকুলামের মৌলিক অংশ। কেননা এখানে পাঠদানের মূল মাধ্যম হচ্ছে আরবি ভাষা। তাই বিভিন্ন একাডেমিক প্রোগ্রামে আরবিভাষী শিক্ষকের সাথে কথোপকথন ও যোগাযোগের জন্য শিক্ষার্থীর মধ্যে পর্যাপ্ত ভাষাজ্ঞান থাকা আবশ্যক।
আরবিভাষী নয় এমন যেকোন শিক্ষার্থীকে তার উপযোগী (প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চতর) স্তর নির্ধারণের জন্য ‘স্তর নির্ধারণী পরীক্ষা’য় অংশ নিতে হবে। এই পরীক্ষায় মৌলিকভাবে আরবি ব্যকরণ, শব্দার্থ, পাঠ ও উচ্চারণ ইত্যাদি বিষয়ে তার দক্ষতা মূল্যায়ন করা হবে। যার ভিত্তিতে শিক্ষকগণ প্রতিটি শিক্ষার্থীর সক্ষমতা-দুর্বলতার দিকগুলো চিহ্নিত করে তার উপযুক্ত পাঠদান নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে। আভ্যন্তরীণ এই পরীক্ষার ফলাফলকে ভিত্তি করেই শিক্ষার্থীকে উপযুক্ত ক্লাস বা কোর্সে ভর্তি নেয়া হবে। এর মাধ্যমে তার যথাযথ পরিচর্যা ও সহযোগিতা নিশ্চিত হবে।
আরেকটি বৈশিষ্ট হলো এ পরীক্ষার ফলাফলের আলোকে শিক্ষার্থীর ব্যাপারে একটি সামগ্রিক ধারণা পাওয়া সম্ভব হয় এবং সে আলোকে সময় ও প্রয়োজনের প্রতি লক্ষ্য রেখে পাঠ্যক্রম ও পাঠদান পদ্ধতি সমন্বয় করা যায়। এটি আরবি ভাষা ইনস্টিটিউটের পাঠদানের গুণগত মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
পরীক্ষায় ইসলামি শাস্ত্রসমুহের অন্তর্ভুক্তি: কুরআন – হাদিস – ফিকহ ও তৎসংশ্লিষ্ট গ্রন্থসমূহ, আরবি কবিতা – গদ্য সাহিত্য ইত্যাদি পরীক্ষার প্রশ্নে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীর ক্লাসিক আরবি পাঠ বুঝার যোগ্যতা যাচাই করা হবে। যেহেতু এ বিষয়গুলো আরবিয় সভ্যতার গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ, তাই এই টেক্সটগুলো শিক্ষার্থীর আরবি ভাষাদক্ষতা পরিমাপের অন্যতম মাপকাঠি বলে বিবেচিত।
আরবি ভাষায় দক্ষতার সার্টিফিকেশন পরীক্ষা (ALPCT)
আরবি ভাষায় দক্ষতার সার্টিফিকেশন হচ্ছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনুসৃত ও স্বীকৃত মান নির্ধারণী পদ্ধতির রূপরেখা অনুযায়ী ব্যক্তির ভাষা দক্ষতা যাচাইয়ের পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় প্রদত্ত সার্টিফিকেট শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীদের জন্য সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ; কারণ এটি ভাষা দক্ষতার প্রমাণস্বরূপ কর্পোরেট অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা বিদেশে গমনের উদ্দেশ্যে জনশক্তি রপ্তানি ব্যুরোতে জমা দেয়া যাবে।
ভাষাদক্ষতার সার্টিফিকেশন পরীক্ষায় আস্থা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করতে কঠোরভাবে মান যাচাই করা হয়ে থাকে। কারণ, এই পরীক্ষায় উচ্চ স্কোর অর্জন করা আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার গঠনের পথকে সুগম করে এবং বিদেশে উচ্চশিক্ষা, চাকুরি বা বসবাসের সুযোগ সৃষ্টি করে। একইভাবে এই সার্টিফিকেট শুধুমাত্র ব্যক্তির ভাষা দক্ষতার প্রমাণপত্র হিসাবেই কাজ করেনা; বরং আন্তসংযোগপূর্ণ বিশ্বায়নের যুগে একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হিসাবেও বিবেচিত হয়।